বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ’র নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদ’ আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বললেন, “শেখ হাসিনার অপশক্তি জনতার প্রতিরোধে পালিয়েছে। এখন আমরা স্বাধীন বোধ করছি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “কিছু মানুষ বলছে বিএনপি সংস্কার মানে না। আসলে বিএনপিই সংস্কারের জন্মদাতা। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের পতনের পর শহীদ জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে দেশকে নতুন পথে নিয়ে গিয়েছিলেন। এখন তারেক রহমানের ৩১ দফার কর্মসূচিতে সেই সংস্কারের পূর্ণ রূপরেখা বিদ্যমান।”
প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে নিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, “ড. ইউনুস নোবেল বিজয়ী, সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি নিরপেক্ষ উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের মাধ্যমে দেশের ভাঙা অর্থনীতি ও প্রশাসনকে পুনর্গঠন করছেন। ছয়টি সংস্কার কমিশন সাত মাস ধরে কাজ করছে, যা ইতিবাচক দিক। তবে সরকারকে শতভাগ নিরপেক্ষ থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, “শহীদ জিয়া নারীদের স্বাধীনতা দিয়েছেন, মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মহিলা সংস্থা গঠন করেছেন। বেগম খালেদা জিয়া দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা বিনামূল্যে করেছেন, ফলে নারী উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান।”
মির্জা ফখরুল বলেন, হাসিনার অপশক্তি জনতার প্রতিরোধে পালিয়েছে। এখন আমরা স্বাধীন বোধ করছি। নির্বাচনের ট্রেন লাইনে উঠে গেছে, আর অপেক্ষা নয়। বিএনপি নেতাকর্মীদের ধানের শীষের পক্ষে ঘরে ঘরে প্রচারণায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
ভারত আমাদের বন্ধু নয়, তারা সীমান্তে মানুষ হত্যা করছে এবং পানির ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না। নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টাও করছে। বন্ধুত্ব হতে হবে সমান সমান ভিত্তিতে। তারেক রহমানের ৩১ দফায় এক কোটি বেকারের জন্য কর্মসংস্থানের রূপরেখা আছে। কৃষি, শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে পুনর্বাসন ও চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত হবেন না। জনগণ এখন পরিবর্তনের অপেক্ষায়। নির্বাচনী যাত্রা শুরু হয়েছে, এই যাত্রাকে সফল করতে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।”
তিনি আরও যোগ করে বলেন, “উপদেষ্টাদের কেউ কেউ কোনো কোনো দলের জন্য পক্ষপাতিত্ব করছে বলে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এমন কোনো পক্ষপাতিত্ব চায় না জনগণ।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ ছিলেন একজন অকৃত্রিম দেশপ্রেমিক ও দলের নির্ভরতার প্রতীক। তিনি শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আদর্শকে ধারণ করেই রাজনীতি করেছেন। দলের দুঃসময়ে তিনি বিএনপির হাল ধরেছিলেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন, তবুও আপসহীন ছিলেন।