জানা নিউজ

হাসিনার অনুগত সাংবাদিকের যত টাকা !

ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান, তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি ও তাদের তিন সন্তান লাবিবা নাঈম খান, আদিভা নাঈম খান এবং যূলিকা নাঈম খানের নামে থাকা ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন। দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের সদস্যরা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থের উৎস আড়াল করার জন্য তাদের নামে ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা রাখেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব হিসাবে মোট ৩৮৬ কোটি টাকা জমা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭৯ কোটি টাকা ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে এসব হিসাবে ৬ কোটি ২৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৪ টাকা জমা রয়েছে। বিশেষভাবে দেখা গেছে, নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যক্তিগত ৯১টি ব্যাংক হিসাবে মোট ২৪৯ কোটি টাকা জমা হলেও, এর মধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে তার হিসাবে মাত্র ৬৪ লাখ টাকা রয়েছে। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়, যার মধ্যে ১৩ কোটি টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন। তাদের তিন সন্তানের ব্যাংক হিসাবেও উল্লেখযোগ্য লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। আডিভা নাঈম খানের হিসাবে ৩৫ লাখ, লাবিবা নাঈম খানের হিসাবে ১ কোটি ২৫ লাখ এবং যূলিকা নাঈম খানের হিসাবে ৬১ লাখ টাকা জমা ছিল। তবে এসব অর্থের অধিকাংশই তারা উত্তোলন করেছেন। এছাড়া, নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা জমা পড়েছে, যার মধ্যে প্রায় পুরো অর্থই উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে এসব হিসাবে মাত্র ২১ লাখ টাকা জমা রয়েছে। দুদকের অনুসন্ধান টিম জানিয়েছে, নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা তাদের ব্যাংক হিসাবের অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর বা স্থানান্তর করার চেষ্টা করছিলেন। এ কারণে তদন্ত কার্যক্রমের স্বার্থে এসব হিসাব ফ্রিজ করা প্রয়োজন বলে আদালতে আবেদন করা হয়। এর আগে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি আদালত নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন। এছাড়া, ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশনার ফলে এখন এসব ব্যাংক হিসাব থেকে কোনো লেনদেন করা যাবে না। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত থাকবে।