প্রতি বিপ্লবের চেষ্টা, রাতের আঁধারে ঢাকা দখলের পাঁয়তারা
রাত ১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারাদেশ থেকে বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপে করো ঢাকায় মানুষকে জড়ো করা হচ্ছিল।
তথাকথিত অহিংস গণঅভ্যুত্থানের ব্যানারে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ জড়ো করার চেষ্টা হয় শাহবাগ ও টিএসসি এলাকায়। রাতে কয়েকটি বাস এবং মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় আনা হয় হাজার হাজার মানুষ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীরা সেসব বাস সরিয়ে দেয়।
জানা যায়, রাত ১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারাদেশ থেকে বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপে করো ঢাকায় মানুষকে জড়ো করা হচ্ছিল। এখানে যারা আসবে তাদেরকে এক লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো শর্ত ছাড়াই দেয়া হবে এমন প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্র নিয়ে আসে। গণঅভ্যুত্থান ও প্রতিবিপ্লবের ব্যানারে তারা রাজধানীতে জড়ো হয়। এখানে আসাদের প্রায় অধিকাংশই গ্রামের ও সাধারণ। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। টিএসসি কিংবা শাহবাগ অবরোধের উদ্দেশ্য ছিল উপস্থিতদের। সেখানে দাঁড়াতে না পারলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার কথা ছিল বলেও জানিয়েছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এক নারী বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদেরকে এক লাখ টাকা করে দেবে বলেছিল, এরপর মাসে তিন হাজার টাকা করে কিস্তি দিয়ে সেই টাকা পরিশোধ করতে বলেছিল। সেজন্যই এসেছি।তবে কে তাকে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের ফরম পূরণ করিয়ে নেয়। এরপর আমরা এখানে এসেছি। মানিকগঞ্জ থেকে বেলা ১১টারে দিকে শাহবাগের পথে আসতে শুরু করে ৬টি বাস। এ সময় বাসে থাকা যাত্রীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, কাগজপত্র নিয়ে জরিনা কলেজের সামনে থেকে আমাদের বাসে উঠতে বলা হয়। টাকা দেওয়া হবে বলে আমাদের ঢাকায় নিয়ে আসে দবির নামের এক ব্যক্তি। মানিকগঞ্জ থেকে আসা সে বাসের চালকের কাছে জানতে চাইলে তিনিও দবির নামের একজনের পরিচয় দেন। দবির সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা কেই চিনেন না বলে জানানো হয়।
কচুয়ার ডুমুরিয়া থেকে কয়েকটি বাসে করে আনা হয় নারীদের। জানতে চাইলে যাত্রীরা জানান স্থানীয় রুনা নামে একজন নারী তাদের ১ লাখ টাকা দিবে বলে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ঢাকায় আসা ব্যক্তিদের থেকে পাওয়া টোকেনে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামে যে সংগঠন রয়েছে তার আহ্বায়ক আ.ব.ম. মোস্তাফা আমীন নামে একজনের তথ্য দেওয়া থাকে। তার নাম্বারে কল দিলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে টোকেনে যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে সেটিও ভুল। সমাবেশের এ প্রচারণা চালায় জিয়াউর রহমান, মাহবুবুল আলম চৌধুরী জালাল উদ্দীন আহমেদ, কামাল হোসেন আজাদ। তাদের নাম্বারে কল দিয়েও বন্ধ পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, একটি চক্র কৌশলে রাতের আঁধারে ঢাকার শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা দখলের পাঁয়তারা করেছিল। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের পরিকল্পনাও ছিল তাদের। প্রলোভন দেখানো বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। ভুয়া গণঅভ্যুত্থান ও প্রতিবিপ্লবের ডাক দেয়া চক্রের হোতাদের খুঁজে বের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।