জানা নিউজ

ট্রাম্পকে চীনের হুঁশিয়ারি ‘আগুনে ঘি ঢালবেন না’,

পরিণতি গোটা মধ্যপ্রাচ্য এমনকি বিশ্ব রাজনীতিতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, চীন

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার পটভূমিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘আগুনে ঘি ঢালা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার (১৭ জুন) বেইজিংয়ে আয়োজিত নিয়মিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করে। চীনের এমন প্রতিক্রিয়া এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক পরিসরে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানের অভ্যন্তরে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আকস্মিক বিমান হামলা চালায়। তাদের দাবি ছিল, ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করাই এই হামলার উদ্দেশ্য। তবে তেহরান বারবার পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “সবাই অবিলম্বে তেহরান ত্যাগ করুন!” তাঁর এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন এ বিষয়ে বলেন, “আগুন উসকে দেওয়া, ঘি ঢালা, হুমকি দেওয়া এবং চাপ সৃষ্টি করা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কোনোভাবেই সহায়ক নয়। বরং এটি সংঘাতকে আরও তীব্র ও বিস্তৃত করে তুলবে।” তিনি আরও বলেন, “চীন সব পক্ষকে, বিশেষ করে যারা ইসরায়েলের ওপর প্রভাব রাখতে পারে, তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানায়, যাতে দ্রুত শান্তির পথে পদক্ষেপ নেওয়া যায় এবং সংঘাতের বিস্তার রোধ করা যায়।”

একই দিন চীনের ইসরায়েলস্থ দূতাবাস ইসরায়েল-ইরান পাল্টাপাল্টি হামলার প্রেক্ষিতে চীনা নাগরিকদের সতর্ক করে একটি বিবৃতি দেয়। সেখানে বলা হয়, “বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে চীনা নাগরিকদের উচিত দ্রুত ইসরায়েল ত্যাগ করা।”

এদিকে, ইরান-ইসরায়েল সংকটের মাঝে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জি৭ সম্মেলনের মাঝপথে হঠাৎ করেই কানাডা থেকে ওয়াশিংটনে ফিরে যান। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ সাংবাদিকদের বলেন, “ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করতে তড়িঘড়ি দেশে ফিরেছেন।” যদিও ট্রাম্প পরে তাঁর ট্রুথ সোশ্যালে ওই বক্তব্যকে ‘প্রচারপ্রিয় ফরাসি প্রেসিডেন্টের বানানো কথা’ হিসেবে উড়িয়ে দেন এবং জানান, তিনি যুদ্ধবিরতি নয়, বরং “এর চেয়ে বড় কিছু” নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছেন।

সিএনএন ও আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প খুব শিগগিরই তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূতকে ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য আলোচনার জন্য পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন।

চীনের মতে, এই সংকট কেবল দুটি দেশের মধ্যকার নয়; বরং এর পরিণতি গোটা মধ্যপ্রাচ্য এমনকি বিশ্ব রাজনীতিতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, যদি না তাৎক্ষণিকভাবে কূটনৈতিক সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।