ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালতের নির্দেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাতো ভাই ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক কবির উদ্দিন প্রামাণিক এবং বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় জামিন আবেদন খারিজ করে এই নির্দেশ দেন। তুহিনের পক্ষে তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ ও অ্যাডভোকেট শেখ সাকিল আহমেদ রিপন আদালতে জামিন আবেদন করেন, কিন্তু বিচারকরা তা নাকচ করেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে গুলশান থানায় তুহিনের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি পৃথক মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ২০০৮ সালে এসব মামলায় বিচারিক আদালত তুহিনকে একটির জন্য আট বছরের এবং অন্যটির জন্য দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। কর ফাঁকির মামলায় তিন ও পাঁচ বছর মেয়াদের পৃথক দুটি দণ্ড দেওয়া হয়, যা একত্রে চলবে বলে বিচারক উল্লেখ করেন—ফলে তুহিনকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে। অন্যদিকে, অবৈধ সম্পদের মামলায় দেওয়া হয় ১০ বছরের কারাদণ্ড।
এই দুই মামলার রায়ের পর দীর্ঘ ১৭ বছর পলাতক ছিলেন তুহিন। অবশেষে তিনি মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন, তবে আদালত কোনো ধরনের ছাড় না দিয়ে সরাসরি তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ সময় তুহিনের আইনজীবীরা জামিনের পাশাপাশি পাঁচটি আবেদন করেন, যার মধ্যে ছিল ডিভিশন, চিকিৎসার সুযোগ, ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত এবং পরোয়ানা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ। তবে আদালতের আদেশে এসব আবেদনও বাতিল করা হয়।
সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে হিসেবে পরিচিত তুহিনের এই মামলাগুলো একসময় দেশের রাজনৈতিক মহলে আলোচিত ছিল। দীর্ঘ সময় আত্মগোপনে থাকার পর আদালতে আত্মসমর্পণ ও কারাবরণের মাধ্যমে এ মামলা এখন নতুন মোড় নিয়েছে।