জানা নিউজ

কাকরাইলে জবি শিক্ষার্থীদের টানা অবরোধ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা তাদের তিন দফা দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে বুধবার রাতভর অবস্থানের পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের অবরোধ কর্মসূচিতে নেমেছেন তারা। ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না’— এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করে রাজপথে চলমান এই আন্দোলন এখন শিক্ষার্থীদের বৃহৎ প্রতিবাদের রূপ নিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের তিনটি মূল দাবি:

১. আবাসন সংকট নিরসনে বৃত্তি দাবি – জবির ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে, যতদিন না পর্যন্ত স্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়।

২. পূর্ণাঙ্গ বাজেটের অনুমোদন – একই অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোনো কাটছাঁট ছাড়াই অনুমোদন করতে হবে।

৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অনুমোদন – বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।

বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা পদযাত্রা শুরু করেন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে। গুলিস্তান, মৎস্য ভবন এলাকায় পুলিশি বাধার মুখে পড়লেও তারা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেন। সেখানে অতর্কিতভাবে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। এতে শতাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হন।

এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থী একযোগে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দিন জানান, “শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার চাই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকব।”

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে বাসযোগে কাকরাইল মোড়ে এসে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন। বেলা ১১টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ ও সংগঠনের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ আরও ঘনীভূত হয়।

আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আন্দোলনরতদের দাবি, সরকারি আশ্বাসে তারা আর আস্থা রাখতে চান না। “আলোচনা নয়, বাস্তবায়ন চাই”— এমন স্লোগানে মুখরিত ছিল কাকরাইল মোড়।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাব দিলেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলছেন, আগেও বহু আশ্বাস তারা পেয়েছেন, কিন্তু কোনো কার্যকর পরিবর্তন আসেনি।

বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমরা দাবি আদায় না করে ক্যাম্পাসে ফিরব না। শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবায়ন দেখতে চাই।”

অন্যদিকে শিক্ষক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে এই আন্দোলন ঢাকা ছাড়িয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে