জানা নিউজ

নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল হত্যার ঘটনায় আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক অরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং রাসেল মোল্লা (২৮) নামে একজনকে হত্যার ঘটনায় মামলায় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এই মামলায় চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার অজ্ঞাত আসামির নামে মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার দুজন হলো- গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়ার শান্ত কাজী (১৯) এবং ফরিদপুরের সালথা থানার ঘটরকান্দা গ্রামের মোহাম্মদ আনিসুর রহমান (৩০)। তাদের মধ্যে শান্ত কাজীকে গত মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে নিজ এলাকা থেকে এবং আনিসুর রহমানকে রাত সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের জামতলাহাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসিমোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় গত মঙ্গলবার রাতে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে দুটি মামলায় মোট ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রতিটি আসামিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এর আগে আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় সোমবার রাতে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড় ঠাকুরকান্দি গ্রাম থেকে মুফতি আবদুল লতিফ (৩৫) এবং গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলম চৌধুরীপাড়ার অভি মণ্ডল ওরফে রঞ্জুকে (২৯) গ্রেপ্তার করা হয়। আবদুল লতিফ গোয়ালন্দ পৌরসভার বাইতুল মোকাদ্দাস জামে মসজিদের ইমাম। গত মঙ্গলবার বিকালে তাদের আদালতে তোলা হলে আবদুল লতিফ হামলায় অংশগ্রহণের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, শুক্রবার নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে রাসেল মোল্লাসহ ভক্তরা অবস্থান করছিলেন। জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ বাজার আনসার ক্লাবে ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি ও তৌহিদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বেলা ৩টার দিকে অতর্কিতভাবে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালানো হয়। বাদী আজাদ মোল্লা বলেন, ‘ঘটনার সময় একপর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ জন দেয়াল টপকে দরবারের ভেতরে ঢুকে গেটের পাশে থাকা তার বড় ছেলে রাসেল মোল্লাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। দরবারে থাকা অন্তত ৫০ জন ভক্ত-মুরিদানকে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানেও দ্বিতীয় দফা রাসেলকে মারধর করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় রাসেলকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামলার বাদী আজাদ মোল্লার দাবি, অজ্ঞাত আসামিরা নুরাল পাগলার দরবারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মারধর করে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে। দরবার শরিফে ভক্তদের মিলাদ মাহফিলে দেওয়া ৪০ লক্ষাধিক টাকা, ৫০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার, ৫৫ লাখ টাকার মূল্যবান জিনিসপত্রসহ ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।