জানা নিউজ

আগৈলঝাড়ায় শশুড়কে অপহরন করে হত্যা, লাশ উদ্ধার

প্রেমের সম্পর্কে পরিবারের অমতে বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই স্ত্রীকে নির্যাতন করা হতো। পরবর্তীতে দাবিকৃত যৌতুকের টানা না দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে শশুড়কে অপহরন পরবর্তীতে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যারপর লাশ গুম করা হয় খালের পানিতে থাকা কচুরিপানার মধ্যে। নির্মম এ ঘটনার একদিন পর শশুড় বাড়িতে বেড়াতে আসে ঘাতক মেয়ে জামাতা। কিন্তু তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা থাকায় থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামাতাকে আটক করে। পরে তার (মেয়ে জামাতা) দেওয়া স্বীকারোক্তি ও দেখিয়ে দেয়া স্থানের খালের পানির কচুরিপানার মধ্য থেকে শশুড়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী চার সন্তানের জননী বিউটি হালদার বাদি হয়ে তার বড় মেয়ে আখি হালদারের জামাতা কৃষ্ণ বাড়ৈকে আসামি করে থানায় মামলা দায়েরের করেন। ওই মামলায় শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতকৃষ্ণ বাড়ৈকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাশাইল-রামানন্দেরআঁক সড়কের ঠাকুরবাড়ি পূর্বপাশের নির্জনস্থানে। ওই এলাকার খালের পানিতে থাকা কচুরিপানার মধ্যথেকে শুক্রবার (২২ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে পুলিশ নিহত শশুড়ের লাশ উদ্ধার করে শনিবার মর্গে প্রেরণ করেছেন। নিহত অখিল হালদার (৫০)উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামানন্দেরআঁক গ্রামের বাসিন্দা মাখন লাল হালদারের ছেলে। পেশায় তিনি ভ্যানচালক ও দুধ বিক্রেতা ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত ঘাতক মেয়ে জামাতা পাশ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের পূর্ব বাকাই গ্রামের কানাই বাড়ৈর ছেলে কাঠমিস্ত্রি কৃষ্ণ বাড়ৈ (২৫)। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে আগৈলঝাড়া থানারওসি মো. অলিউল ইসলাম এজাহার ও গ্রেপ্তারকৃত ঘাতক কৃষ্ণ বাড়ৈর বরাত দিয়ে জানান, দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না দেয়ায় গত ২০ আগস্টদুপুরে কৃষ্ণ বাড়ৈ কৌশলে তার শশুড় অখিল হালদারকে ভ্যানসহ অপহরণ করে বাশাইল নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই এলাকার নির্জনস্থানে বসে শ্বাসরুদ্ধ করে অখিলকে হত্যার পর পাশের খালের কচুরিপানার মধ্যে লাশ ফেলে রাখা হয়। এরপর নিহত অখিলের ভ্যান নিয়ে পালিয়ে মাদারীপুর গিয়ে ওই ভ্যান বিক্রি করে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে ঘাতক কৃষ্ণ বাড়ৈ। ওসি আরও জানান, অখিল নির্দিষ্ট সময়ে বাড়িতে ফিরে না আসায় তার পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পরে। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্নস্থানে খুঁজে না পেয়ে ফোনে বিষয়টি মেয়ে আখি ও তার জামাতা কৃষ্ণকে জানায় শ্বাশুড়ি বিউটি হালদার। পরেরদিন ২১ আগস্ট মেয়ে আখি ও তার জামাতা কৃষ্ণ শশুড় বাড়িতে আসে। তবে অখিলের নিখোঁজের বিষয়ে কৃষ্ণর অসংলগ্ন কতাবার্তার বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করার পর ২২ আগস্টদিবাগত রাতে পুলিশ কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদেকৃষ্ণ তার শশুড় অখিলকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে ওইদিন রাতেই তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ি কৃষ্ণকে নিয়ে লাশ উদ্ধারে নামে পুলিশ। কৃষ্ণর দেখিয়ে দেয়াস্থান থেকে শশুড় অখিলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, বিয়ের পর থেকে বিদেশে যাবার কথা বলে বিভিন্ন সময়ে শশুড়ের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা যৌতুক নেয় কৃষ্ণ। পরে একটি ভ্যান ক্রয়ের জন্য টাকা দাবি করলে শশুড় তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কৃষ্ণ বাড়ৈ ক্ষিপ্ত হয়ে এ নির্মম হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।