জানা নিউজ

কোরিয়ার প্রথম এআই অ্যানিমেশন সিরিজ ‘ক্যাট বিগি’, জুলাইয়ে মুক্তি ইউটিউবে

কোরিয়ার বিনোদন শিল্পে অ্যানিমেশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেলবন্ধনে নতুন এক অধ্যায় যোগ হলো। প্রভাবশালী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিজে ইএনএম এবার প্রথমবারের মতো পুরোপুরি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করেছে অ্যানিমেশন সিরিজ ‘ক্যাট বিগি’। গত সোমবার নতুন এই সিরিজের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
সিজে ইএনএম ‘প্যারাসাইট’ সিনেমার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করেছিল। চলতি বছর তাদের প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি আয়োজন করে ‘কোরিয়ান কনটেন্ট মিটস এআই: হাউ এআই টেকনোলজি ইজ ট্রান্সফরমিং দ্য ফিউচার অব দ্য কনটেন্ট ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। সেখানে এআই প্রযুক্তির সম্ভাবনা, কনটেন্ট নির্মাণে এর প্রভাব এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা উঠে আসে আলোচনায়। সেখানেই প্রকাশ করা হয়, কীভাবে তারা ‘ক্যাট বিগি’ তৈরি করেছে।
শর্ট ফর্ম অ্যানিমেশন সিরিজ হিসেবে তৈরি হওয়া ‘ক্যাট বিগি’-এর গল্পে এক বিড়ালের সঙ্গে এক শিশুর আকস্মিক পরিচয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় কাহিনি। ক্রমেই সেই বিড়াল হয়ে ওঠে শিশুটির বাবার মতো অভিভাবক। বাবার ভূমিকায় বিড়ালের অভিযাত্রা ঘিরেই নানা মজার এবং আবেগঘন ঘটনা ঘটতে থাকে।
সিরিজটি তৈরি করতে ছয়জন বিশেষজ্ঞ সার্বক্ষণিক কাজ করেছেন। সিজে ইএনএম-এর এআই বিজনেস অ্যান্ড প্রোডাকশনের প্রধান বায়েক ইউং-জাং জানান, মাত্র পাঁচ মিনিটের একটি থ্রিডি অ্যানিমেশন তৈরি করতে সাধারণত তিন থেকে চার মাস সময় লাগে। এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অ্যানিমেশন চরিত্রের গতি এবং অভিব্যক্তি নিখুঁতভাবে প্রকাশ করা। তবে এআই প্রযুক্তির কারণে কাজের গতি যেমন বেড়েছে, তেমনি জটিল চরিত্র ডিজাইনও সহজ হয়েছে।
অন্যদিকে, ফেব্রুয়ারিতে চ্যাটজিপিটির মূল প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই ঘোষণা করে লেখা থেকে ভিডিও তৈরির মডেল সোরা-র কথা। ব্যবহারকারীদের লিখিত বর্ণনা থেকে দৃশ্য তৈরি করতে সক্ষম এই মডেল সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রেও সম্ভাবনা তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাইবেকা চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজকরা ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা প্রথমবারের মতো এআই-নির্ভর চলচ্চিত্রকেও উৎসবে মূল্যায়নের আওতায় আনবে।
‘ক্যাট বিগি’ সিরিজটি সাজানো হয়েছে মোট ৩০টি পর্বে। প্রতিটি পর্বের দৈর্ঘ্য দুই মিনিট। আন্তর্জাতিক দর্শকের জন্য সিরিজটি জুলাই মাসে ইউটিউবে মুক্তি পাবে। সিজে ইএনএম জানিয়েছে, সিরিজটি শতভাগ এআই জেনারেটেড এবং পুরো প্রকল্পটি শেষ করতে পাঁচ মাস সময় লেগেছে। এই সময়ে গল্প, চরিত্র এবং দৃশ্যের আলাদা আলাদা ডিজাইন তৈরি করতে হয়েছে।
এআই দিয়ে নির্মিত এমন প্রকল্প শুধু প্রযুক্তির অগ্রগতি নয়, বিনোদন জগতেও নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করছে বলে মনে করছেন অনেকেই।