ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে গান ও নাচের অনুমতি দিয়েছেন। সমপ্রতি অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত পবিত্র এ স্থান পরিদর্শনের সময় তিনি এই নির্দেশনা দেন। তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদুলোর এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলি চ্যানেল সেভেনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, বেন-গভিরের নতুন নীতির আওতায় এবারই প্রথমবারের মতো ইহুদি দর্শনার্থীদের পবিত্র স্থানে প্রকাশ্যে ধর্মীয় সঙ্গীত ও নৃত্যের অনুমতি দেওয়া হলো। ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী ‘জিউইশ পাওয়ার’ পার্টির প্রধান বেন-গভির বর্তমানে পুলিশ বাহিনীর দায়িত্বেও রয়েছেন। চ্যানেল সেভেন জানিয়েছে, তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণের পুরো এলাকাজুড়ে ইহুদি প্রার্থনা, গান এবং অন্যান্য ধর্মীয় আচারের অনুমতি দিতে। পুলিশ কমিশনার কোবি শাবতাই ইতোমধ্যে এই নির্দেশ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। আনাদুলোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিন সপ্তাহ আগে বেন-গভির তার কার্যালয়ে আল-আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদি প্রবেশাধিকারের পক্ষে থাকা বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা উন্মুক্ত স্থানে ইহুদি ধর্মীয় অনুশীলনের সুযোগ আরও সমপ্রসারণের প্রস্তাব দেন। সেই বৈঠকে বেন-গভির জানান, ‘আমার নীতিই হলো পুরো প্রাঙ্গণে গান গাওয়ার অধিকার দেওয়া।’ তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। ২০২২ সালের শেষ দিকে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বেন-গভির আল-আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদিদের নিয়ম লঙ্ঘনের প্রবণতা আরও বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে মসজিদের ধর্মীয় ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। উল্লেখ্য, আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হিসেবে বিবেচিত। অন্যদিকে, ইহুদিরা এটি ‘টেম্পল মাউন্ট’ হিসেবে দাবি করে, যেখানে তাদের মতে একসময় দুটি প্রাচীন মন্দির ছিল। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল, এবং ১৯৮০ সালে পুরো শহরকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করে, যদিও আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় এখনো তা স্বীকৃতি দেয়নি। ২০০৩ সাল থেকে ইসরায়েল সরকার শুক্র ও শনিবার বাদে প্রতিদিনই আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের প্রবেশাধিকার দিয়ে আসছে।