জানা নিউজ

রাষ্ট্রীয় মূলনীতি নিয়ে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছায়নি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

দীর্ঘ রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার ষষ্ঠ দিনেও রাষ্ট্রীয় মূলনীতির প্রশ্নে পূর্ণ ঐকমত্য গড়ে উঠেনি। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার বৈঠক শেষে এ কথা জানান কমিশনের সহসভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজ।

তিনি জানান, সাংবিধানিক কাঠামো ও নিয়োগ ব্যবস্থার সংস্কার প্রস্তাবে অনেক অগ্রগতি হলেও ‘রাষ্ট্রের মূলনীতি’ নির্ধারণে একমত হতে পারেনি সব দল। ফলে কমিশনের কার্যক্রম একটি জটিল মোড় নিয়েছে।

ড. আলী রীয়াজ জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) প্রস্তাব বাতিল করে তার পরিবর্তে “সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি” গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে।

এই কমিটির প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী—

১. প্রধানমন্ত্রী

২. বিরোধীদলীয় নেতা

৩. জাতীয় সংসদের দুই কক্ষের স্পিকার

৪. রাষ্ট্রপতি

৫. প্রধান বিচারপতির একজন প্রতিনিধি

— এদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের ধারণা দেওয়া হয়েছে।

ড. রীয়াজ জানান, অধিকাংশ দল এই প্রস্তাবে সমর্থন জানালেও কিছু রাজনৈতিক দল আপত্তি তুলেছে। এর বাইরে আরও কিছু নতুন পরামর্শ এসেছে, যেগুলো পর্যালোচনা করে আগামী সপ্তাহে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আরও বলেন, নিয়োগ কমিটির কাঠামো ও কার্যপ্রণালি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতা কাঠামো সংক্রান্ত আলোচনাও এগোবে না। এক কথায়, রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারের মূলধারা এখন এই নিয়োগব্যবস্থার ওপর নির্ভর করছে।

ড. রীয়াজ বলেন, ‘আমরা রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। ১৬ বছরের দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের এখানে বিভক্ত থাকার সুযোগ নেই।’

তিনি সকল পক্ষকে পরমত সহিষ্ণুতা বজায় রেখে সম্মিলিতভাবে আগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেভাবে কমিশনের আলোচনায় সকলে অংশ নিচ্ছে, তেমনটাই জাতীয় জীবনের সবখানেই বজায় রাখতে হবে।