ইরান ও ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল ট্রাম্প ইসরায়েলের পক্ষ হয়ে যুদ্ধে জড়াবেন কিনা তার জন্য দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছেন ট্রাম্প। এমন সময় নেওয়াতে গভীরভাবে হতাশ হয়েছে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার জোট।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের কলামিস্ট গিডিয়ন লেভি এমনটিই প্রকাশ করেছে।
লেভি বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় দুই সপ্তাহ মানে ‘চিরকাল’। ট্রাম্প যদি সত্যিই অপেক্ষা করেন ও এটা যদি ‘কৌশলগত বিভ্রান্তি’ না হয়ে থাকে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে জড়ানোর সম্ভাবনা প্রতিনিয়তই কমছে।
গিডিয়ন লেভির মতে, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস করলেও ইসরায়েল দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ হবে না। ইরান আবারও তার সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠন করতে পারবে ও গাজা বা অন্যান্য নিরাপত্তা সমস্যা থেকেই যাবে।
ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান বাস্তবতায় রাজনৈতিকভাবে নেতানিয়াহুর টিকে থাকার অন্যতম কৌশল হলো- যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধে টেনে আনা। কিন্তু ট্রাম্পের সময় নিতে চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহুর আকাঙ্ক্ষায় বড় ধাক্কা হিসেবেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন, কিন্তু হামলা চালানো হবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল। পরে যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস জানায়, ইরান যদি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বাতিল করতে রাজি হয়, তাহলে ট্রাম্প হামলা শুরুর সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখবেন।
এদিকে বুধবার (১৮ জুন) ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়াবে কিনা এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেছিলেন, আমি এটা করতে পারি, আমি নাও করতে পারি।
এর আগে সিবিএস জানিয়েছিল, ইরানের ভূ-গর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা ফোর্দোতে মার্কিন হামলার কথা ভাবছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
অন্যদিকে, ইরান স্পষ্ট জানিয়েছে দিয়েছে, তারা হোয়াইট হাউজের দরজায় ঝুঁকবে না। তাছাড়া ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করলে আরও কঠোর আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে খামেনির দেশ।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা। হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ অন্তত কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়।