টাঙ্গাইলে পাঁচ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান। রোববার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জনসেবা চত্বরে বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি। এর আগে পরিবেশ উপদেষ্টা জনসেবা চত্বরে দুটি গাছের চারা বৃক্ষরোপণ করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, প্রকৃতিকে আমরা বিরক্ত করে নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গাছ কেটে বলি, ২০ হাজার গাছ কেটে ৪০ হাজার গাছ লাগাবো। এজন্য আমাদের এতো বড় বড় বিপত্তি হয়। আপনি কিছু প্রাকৃতিক অবস্থায় ফেরত আনতে পারেন, কিন্তু সবটা ফেরত আনতে পারবেন না। বাংলাদেশ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হওয়ারই দরকার ছিল না। আমরা এতোই প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ছিলাম, আমরা এমন অত্যাচার করলাম প্রকৃতিকে, এখন আমাদের তা সংশোধনের কাজ করতে হচ্ছে। আজকের এই কাজটি আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ধ্বংস প্রায় প্রাকৃতিক অবস্থায় এটিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে নিজের স্বার্থেই। তিনি আরও বলেন, যে পাঁচ লাখ গাছ লাগানো হবে, তা দেশীয় গাছ নির্বাচন করা হয়েছে। এই গাছগুলো প্রচুর পরিমাণে প্রাণীদের আশ্রয় দেবে। এই গাছগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু সবুজ করার জন্য নয়, আমরা ভালো অক্সিজেন পাবো, দূষণ কমবে, পাখির আশ্রয় হবে। যারা এই গাছগুলো লাগাবে, তাদের গাছের সঙ্গে একটা আত্মিক সম্পর্ক হয়ে যাবে। আমরা গাছগুলো লাগিয়েই বসে থাকবো না, সেগুলোর যত্ন ও পরিচর্যা করবো। আমাদের ধ্বংসাত্মক উন্নয়ন প্রক্রিয়া সেখান থেকে নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। এদিকে, টাঙ্গাইলের মধুপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বনে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে করা ১২৯টি মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন রিজওয়ানা হাসান। উপদেষ্টা বলেন, শালবনে আবার শাল গাছ ফেরত আনা হবে। তাই আসন্ন বর্ষায় বেশি বেশি শাল গাছের চারা রোপণ করতে হবে। এখানে যারা বনবাসী আছেন, তাদের বন রক্ষায় ভূমিকা পালন করতে হবে। এসব কাজে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। বনে যে জায়গা বেদখল আছে সেগুলো চিহ্নিত করতে সীমানা পিলার দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শালবনে বাণিজ্যিকভাবে ইউক্যালিপটাস ও আকাশিয়া গাছ রোপণ করা হয়। সেগুলো ক্রমান্নয়নে বন্ধ করা হবে। এ সময় জেলা প্রশাসক শরীফা হক, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ বনবিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।