সাড়ে আটশোরও বেশি গোল, অগণিত জাদুকরী মুহূর্ত, মাঠজুড়ে অতুলনীয় দাপট-এই হলো লিওনেল মেসির বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারের সংক্ষিপ্ত রূপ। বাঁ পায়ের অসাধারণ কারুকার্য, নিখুঁত ফ্রি-কিক কিংবা মাঝমাঠ থেকে একক নৈপুণ্যে গোল-সবই ফুটবলপ্রেমীদের চোখে স্মরণীয়। তবে এতসব গোলের ভিড়ে মেসির হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের গোলটি শুনলে চমকে যেতে পারেন অনেকেই। সেটি ছিল তার স্বভাববিরুদ্ধ একটি হেড।
এই ‘অপ্রত্যাশিত’ গোলটির কথা জানিয়ে দিয়েছেন মেসি গতকাল শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে। বিশ্বকাপজয়ী এই আর্জেন্টাইন তারকা জানান, ২০০৯ সালের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হেডে করা গোলটিই তার সবচেয়ে প্রিয়।
সেবার রোমে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ২-০ গোলে জয় পায় মেসির বার্সেলোনা। ম্যাচের ৭০তম মিনিটে জাভি হার্নান্দেজের ক্রস থেকে ডি-বক্সে উঠে হেড করেন মেসি। গোলরক্ষক এডউইন ফন ডার সারকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। যদিও হেডে গোল করা মেসির জন্য একদম সাধারণ কোনো ঘটনা নয়-দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি হেডে গোল করেছেন মাত্র ২৮টি।
রেকর্ড আটবারের ব্যালন দ’অরজয়ী মেসি বলেন, “আমি হয়তো আরও অনেক সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ গোল করেছি। কিন্তু ইউনাইটেডের বিপক্ষে সেই গোলটি সব সময় আমার প্রিয়।” মেসির এই বক্তব্য প্রকাশ করেছে বিবিসি।
তবে প্রশ্ন থাকে, হঠাৎ এই গোলটিকে নিয়ে এত আগ্রহ কেন? এর পেছনে রয়েছে এক দাতব্য আয়োজন। ইন্টার মায়ামি ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে ‘আ গোল ইন লাইফ’ নামে একটি প্রকল্পের জন্য এই গোলটি বেছে নিয়েছেন মেসি। এই উদ্যোগে তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিখ্যাত তুর্কি শিল্পী রেফিক আনাদল। মেসির সেই গোলের মুহূর্তটিকে রূপ দেওয়া হবে একটি নান্দনিক চিত্রকর্মে, যেখানে থাকবে মেসি ও আনাদলের স্বাক্ষর। এরপর সেটি ১১ জুন নিউ ইয়র্কে নিলামে তোলা হবে জনহিতকর কাজে অর্থ সংগ্রহের জন্য।
এই উদ্যোগ যেমন মানবিক, তেমনি স্মৃতিময় এক মুহূর্তকে অমর করে রাখার চেষ্টাও। মাঠের মেসি যতোটা মোহনীয়, তার বাইরের এই রূপটিও ঠিক ততটাই অনুপ্রেরণাদায়ী।