২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ মে (মঙ্গলবার)।
রোববার (৪ মে) আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে আদালত শুনানির জন্য নতুন এই দিন ধার্য করেন। রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ করেছে, অর্থাৎ রায় চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতের অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছে।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ ঐ মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করে ৪৯ আসামির সবাইকে খালাস দেন। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে দেওয়া দ্বিতীয় চার্জশিট আইনি ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য নয়, এবং তা মামলায় ষড়যন্ত্র প্রমাণে যথেষ্ট নয়।
হাইকোর্টের রায়ের পর আইনজীবীরা বলেন, যে জবানবন্দির ভিত্তিতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল, তা পরবর্তীতে স্বয়ং আসামি প্রত্যাহার করেছেন। এছাড়া মামলায় আর কোনো স্বাধীন ও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যা সাজা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ছিল।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ওই ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন এবং দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা গুরুতর আহত হন।
এই ঘটনায় দুটি মামলা—একটি হত্যা ও আরেকটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে—দায়ের করা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত রায় দেন, যেখানে লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন, এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
এরপর মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হলে ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল একসাথে শুনানি হয়। হাইকোর্ট সব আসামিকে খালাস দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে দুটি পৃথক লিভ টু আপিল পিটিশন দাখিল করে, যার শুনানি হবে আগামী ৬ মে, ২০২৫। শুনানি করবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।