উপদেষ্টার আশ্বাসে আশ্বস্ত না হয়ে কুয়েট উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টার আশ্বাসে আশ্বস্ত না হয়ে কুয়েট উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষা উপদেষ্টা কুয়েটে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। সেই অনুযায়ী জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
তিনি এ সময় অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। পরে উপদেষ্টা শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন,
“এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, পরিস্থিতি এ পর্যায়ে এসে গেছে। ছাত্রদের অনশন করতে হচ্ছে। আমি এখানে একজন পিতা হিসেবে এসেছি। আমি তাদের বলেছি যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে তারা যেন পানি পান করে। আর যারা সুস্থ আছে, তারা অনশন পালন করুক। কিন্তু তারা সেটা শুনেনি। তারপরও আমি তাদের অনুরোধ করছি, তারা যেন অনশন ভাঙে। আমি আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব তাদের এই সমস্যা সমাধান হবে।”
উপদেষ্টা বলেন,
“তারা চাচ্ছে আমরা এখনই কোনো ঘোষণা দেই; যার মাধ্যমে তারা অনশন ভাঙতে পারে। আমি তাদের বোঝাতে চেষ্টা করেছি আইনি কিছু বিষয় রয়েছে। আমরা যাই করি না সেটা আইন দ্বারা নির্দিষ্ট হতে হবে।”
পরে কুয়েটের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্য তাদের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানালে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “আমি এসেছি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে, অন্য কারো সঙ্গে এখন কোনো কথা নয়।”
এসময় উপদেষ্টার আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আশ্বস্ত না হয়ে কুয়েট উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গত সোমবার বিকেল থেকে কুয়েটের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে আমরণ অনশণ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। এখন পর্যন্ত অসুস্থতার কারণে সাত শিক্ষার্থীকে মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তিন সদস্য অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদল এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে, যাতে অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় একাডেমিক কার্যক্রম ও হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিক্ষার্থীরা গত ১৩ এপ্রিল থেকে পুনরায় ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন এবং ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।