অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষার জীবনে নেমে এসেছে গভীর শোক। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তাঁর মা মাসুদা হক (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি ও ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা ও সেবায় দীর্ঘ সময় ধরে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন অর্ষা। মায়ের পাশেই কাটিয়েছেন প্রতিটি মুহূর্ত, এমনকি অভিনয় থেকেও দূরে ছিলেন অনেকটা সময়।
অর্ষার মায়ের মৃত্যুতে শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়েছে শোবিজ অঙ্গনেও। তবে এই ব্যক্তিগত শোকের মাঝেও সামনে এসেছে একটি গুরুতর সামাজিক ইস্যু-দেশের হাসপাতাল সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন। অর্ষার স্বামী, জনপ্রিয় অভিনেতা মোস্তাফিজুর নূর ইমরান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “ছুটির দিনে এই দেশে কেউ অসুস্থ হবেন না আর। হলে হাসপাতালে যাবেন না।”
তিনি আরও লিখেন, “সাংবাদিকদের বলি-ফোন আর মাইক নিয়ে হোটেল-রিসোর্ট-পার্কে ছেলেমেয়েরা কী করছে সেটা নিয়ে মাথাব্যথা না করে, যদি সততার দম থাকে, তাহলে হাসপাতালে ঘুরে দেখুন। কী দুরাবস্থা! কী অবস্থা হাসপাতালগুলোর! সেবা বলে কিছু নেই-সবই টাকার খেলা। চিকিৎসা ব্যবসা না সু-চিকিৎসা সেবা?
ইমরানের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন তোলে এবং স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলে।
অভিনয়জীবনে নাজিয়া হক অর্ষা শুরু করেছিলেন একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। এরপর নাটক, চলচ্চিত্র ও ওয়েব সিরিজে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করে তিনি নিজেকে আলাদা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’, ‘সাহস’, ‘জাহান’, ‘কুহেলিকা’সহ বিভিন্ন ওটিটি প্রজেক্টে তাঁর অভিনীত ভিন্নধর্মী চরিত্রগুলো প্রশংসিত হয়েছে দর্শকমহলে। তবে অভিনয়ের এই পথচলায় অর্ষার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন তাঁর মা-যার বিদায়ে তিনি এক গভীর শূন্যতার মুখোমুখি।
অর্ষার ব্যক্তিগত এই ক্ষতি কেবল একটি পরিবারের শোক নয়, বরং সমাজের স্বাস্থ্যসেবার বাস্তবতা ও সীমাবদ্ধতা নিয়েও আমাদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।
Prev Post