জানা নিউজ

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার নতুন তারিখ ১৮ মে

দীর্ঘ ৮ বছরেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম চাঞ্চল্যকর ঘটনা—বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য নতুন করে ১৮ মে তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) এই নির্দেশ দেন।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে আজ নির্ধারিত তারিখে প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হন। এর ফলে আদালত আবারও নতুন দিন ধার্য করলেন। উল্লেখযোগ্য যে, এ নিয়ে মামলাটির তদন্তে ৮৪তম বার সময় নিলো সিআইডি।

২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে একযোগে চুরি হয় ৮ কোটি ১০ লাখ (৮১ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার। অর্থগুলো মূলত স্থানান্তর করা হয় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে।

ঘটনার পরের মাসে, ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধিত ২০১৫), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৪ ধারা এবং দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারায় মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।

চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় পাঠানো আরও ২০ মিলিয়ন ডলার আটক করা হয়। ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইয়র্কে মার্কিন আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে ৬৬ মিলিয়ন ডলার উদ্ধারে মামলা দায়ের করে। ২০২৩ সালের ২ মার্চ নিউইয়র্ক সুপ্রিমকোর্ট মামলাটি চালিয়ে নেওয়ার অনুমতি দিলেও আরসিবিসির বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ খারিজ করে দেয়।

দীর্ঘ ৮ বছরেও মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে সিআইডির তদন্তের গতি ও গুরুত্ব নিয়েই। একের পর এক তারিখ পেছানো, সাক্ষী জোগাড়ে বিলম্ব এবং মামলার অগ্রগতির স্বচ্ছ প্রতিবেদন না থাকায় জনমনে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক মানের আর্থিক জালিয়াতির ঘটনায় বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।