ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা ৮ মে রাতে চরমে পৌঁছেছে। পাকিস্তান অভিযোগ করেছে যে, ভারতীয় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যা ভারতের এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিহত করা হয়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত ৭ মে “অপারেশন সিন্দুর” চালায়, যেখানে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়
পাকিস্তান দাবি করেছে যে, তারা ২৫টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে এবং পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করা হয়েছে এবং পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের লাহোরে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, গুলপুর, ভিম্বার, চাক আমরু, বাঘ, কোটলি, সিয়ালকোট ও মুজাফফরাবাদে হামলা চালায়। এতে জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও সহচররা নিহত হন । পাকিস্তান দাবি করে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ও ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এছাড়া, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানায়, ভারতের হামলায় ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে শিশুও রয়েছে । নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাবর্ষণ চলছে। এতে ভারতের পুঞ্চ জেলায় ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন ।
পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা: উভয় দেশ পরমাণু শক্তিধর হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, পরমাণু যুদ্ধ হলে প্রায় ১২.৫ কোটি মানুষ প্রাণ হারাতে পারে । যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইরানসহ বিভিন্ন দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, তারা প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার রাখে ।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন । বাংলাদেশ সরকার “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়” নীতিতে অটল থেকে আঞ্চলিক শান্তি ও সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে ।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। উভয় দেশের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ ও বেসামরিক প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের জন্যও এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা ও সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।