ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এবং আরও ৯৪ জন আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতসহ উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৪ হাজার ২২১ জনে পৌঁছেছে। নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৪ হাজার ৫৬৭ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন অবৈধ বসতিতে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। ওই সময় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে তারা। একই সঙ্গে প্রায় ২৫০ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে আসে। হামাসের এই হামলার প্রতিশোধ নিতে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচারে হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েল। যা এখনও অব্যাহত।
ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন।
ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতায় নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। বেসামরিক মানুষ নিহতের ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানিয়ে গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়।জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।