জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সরকার এবং আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের মধ্যে সমঝোতার আভাস দেখা দিলেও স্থবিরতা এখনও কাটছে না। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি স্থগিত করলেও কমপ্লিট শাটডাউন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
রোববার (২৯ জুন) রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা জানান, বিকেল ৪টায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল। এর মধ্যে ১০ জন আয়কর বিভাগের এবং ১০ জন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা থাকবেন। মির্জা আশিক রানা বলেন, “চেয়ারম্যানের পদত্যাগ এবং এনবিআরের যৌক্তিক সংস্কারের বিষয়েই মূলত বৈঠক হবে।” তবে বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান থাকবেন না বলে জানা গেছে। উপদেষ্টার সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসতে চাওয়ায় ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এনবিআরের অচলাবস্থার কারণে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরে পণ্য খালাস এবং জাহাজে পণ্য তোলা কার্যত বন্ধ হয়ে আছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, এতে দৈনিক প্রায় দুই হাজার পাঁচশ কোটি টাকা থেকে দুই হাজার ছয়শ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, “এনবিআরের অচলাবস্থার কারণে প্রতিদিন আড়াই হাজার থেকে দুই হাজার ছয়শ কোটি টাকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্ষতির মুখে পড়ছে। তুলনামূলক ছোট কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।”
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, “দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। পোর্টে, বিমানবন্দরে আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য পড়ে থাকায় বৃষ্টি-রোদে নষ্ট হচ্ছে।” ব্যবসায়ী নেতারা এই অচলাবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ চান। এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নাসিম মঞ্জুর বলেন, “কোনো সমস্যা টেবিলে বসে সমাধান না-হবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। বসতে হবে, কথা শুনতে হবে, কিছু ছাড় দিতে হবে। তবে এনবিআরের সংস্কারও অবশ্যই হতে হবে।”
অন্যদিকে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার আহ্বান তাঁরা জানাচ্ছেন। তবে পাসপোর্টধারী যাত্রীসেবা যথারীতি চালু রয়েছে। এখন সবাই তাকিয়ে আছে বিকেলের বৈঠকের দিকে, যা হতে পারে এনবিআরের অচলাবস্থা নিরসনের প্রথম ধাপ।