কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অস্কার বিজয়ী বিশ্ব নন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়িতে গতকাল বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা। প্রতি বছর বৈশাখের শেষ গতকাল বুধবার থেকে পাঁচদিন ব্যাপী চলে এ মেলা। বৈশাখী মেলার প্রচলন সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ জমিদার হরি কিশোর রায় চৌধুরীর সময়কাল থেকে শুরু হয়। শ্রী শ্রী কাল ভৈরবী পূজা উপলক্ষে তিনি এ মেলার প্রচলন শুরু করে ছিলেন। এ বাড়িটি এলাকায় রায় বাড়ি নামেই পরিচিত। করোনা মহামারির সময় ও গত বছর আওয়ামী দলীয় কোন্দলের কারণ ব্যাতীত কাল ভৈরবী পূজা না হলেও মেলা প্রচলনের শুরু থেকে অদ্যাবদি মেলা বন্ধ হয়নি। বাড়ির সামনের খোলা মাঠ ও পুকুর ঘাটের সামনে বসে এ মেলা। যেখানে মাটির পুতুল, হাড়ি-পাতিল, খেলনা, তৈজসপত্র, কসমেটিক, কাঠের জিনিস ইত্যাদি নানা রকম স্টলে মুখরিত হয় রায় বাড়ির প্রাঙ্গণ। নাগরদোলা ও চরকিতে চরে বিনোদনে মেতে ওঠে শিশু কিশোর। মেলা চলাকালীন সময়ে দূরদূরান্ত থেকে শত শত মানুষ মেলা পরিদর্শন, কেনা কাটা ও বিনোদনের জন্য আসে। এ বাড়িতে ১৮৬০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী। ১৮৮৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতা ছড়াকার সুকুমার রায়। দেশ বিভাগের পূর্বে উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী সপরিবারে কলকাতা চলে যান। উত্তরাধিকার কেউ না থাকায় বাড়িটি বর্তমানে সরকারের রাজস্ব বিভাগের তত্বাবধানে রয়েছে। সম্প্রতি বাড়ির ধংসপ্রাপ্ত একটি স্থাপনা ও পুকুর ঘাট সরকারের রাজস্ব বিভাগ থেকে সংস্কারের ফলে এর শোভা বর্ধিত হয়েছে। এ বার মেলা বেশ জাঁকজমক পূর্ণ হবে এমনটিই আশা করছেন এলাকাবাসী। বাড়িটি সংস্কারের ফলে মেলা ছাড়াও দর্শনার্থীগণ নিয়মিত রায় বাড়ি পরিদর্শনে আসেন। কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাঈদুল ইসলাম বলেন, মেলার যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ বছর মেলা থেকে ৭১হাজার ৭শত টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দরদাতাকে একটি কমিটি মাধ্যমে পরিচালনার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করবে।