জানা নিউজ

হার দিয়ে সিরিজ শুরু করলো বাংলাদেশ

সরাসরি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার জন্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে তেজদীপ্ত, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ও প্রেরণামূলক পারফরমেন্সের প্রয়োজন ছিল তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে। আফগানিস্তান তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশকে হেসে খেলে হারিয়েছে। আগে ব্যাটিং করতে নেমে আবুধাবিতে মাত্র ২২১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। বোলিংয়ে খানিকটা লড়াই করে বাংলাদেশ ম্যাচটা নিতে পেরেছে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। প্রাপ্তি এতটুকুই। ৪৭.১ ওভারে হাতে ৫ উইকেট রেখে আফগানিস্তান মেচে জিতে নেয়। সবার নজর ছিল সাইফ হাসানের দিক। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভালো করে ওয়ানডেতে সুযোগ পাওয়া এই ব্যাটসম্যান কেমন করেন সেটাই ছিল দেখার। লিস্ট এ ক্রিকেটে ৫০০০ রান করা এই ব্যাটসম্যান প্রথমবার ৫০ ওভারের ক্রিকেটে। ভালো করার দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন। ফর্মে থাকা এ ব্যাটসম্যান ৩৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২৬ রানও করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই পথ ভুলে সাজঘরে ফিরে যান। তাতে ওয়ানডে অভিষেক রাঙানো হয়নি তার। ভুলে ভরা ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। প্রচুর ডট বল খেলেছে দল। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১৬৯। আসা যাওয়ার মিছিলে পুরোপুরি এলোমেলো ছিল ব্যাটিং। তাওহীদ ও মিরাজ বাদে তেমন কেউই ভালো করতে পারেননি। ৩ উইকেটে ৫৩ রান থেকে মিরাজ ও তাওহীদের লড়াই শুরু হয়। তাদের ব্যাটের দিকেই বাংলাদেশের স্কোর বোর্ড নির্ভর করছিল। ১০১ রানের জুটি গড়ার পথে দুজনের রসায়ন ছিল দারুণ। কিন্তু তাওহীদের ভুল ডাকে রান আউট হয়ে ভাঙে তাদের জুটি। ৫৬ রান করে তাওহীদ ফেরেন সাজঘরে। মিরাজ তাকে অনুসরণ করেন আরো চার রান যোগ করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান করা মিরাজ ৮৭ বলে ১টি করে চার ও ছক্কা হাঁকান। তাওহীদের ব্যাট থেকে আসে ১ চার ও ৩ ছক্কা। শেষ দিকে চরম বাজে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ২২১ রান এ গুটিয়ে যায় ৭ বল বাকি থাকতেই। আফগানিস্তানের সেরা বোলার রশিদ খান ও আজমত উল্লাহ উমারজাই। ৩টি করে উইকেট নেন এই দুই বোলার। ২ উইকেট পেয়েছেন গাজনাফার। স্বল্প পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে নেমে শুরুতে খুব একটা ভালো করেনি বাংলাদেশ। তাতে আফগানিস্তানের রান অনায়াসে ফিফটি ছুঁয়ে ফেলে। দশম ওভারে তানভীর স্ট্যাম্পড করেন ইব্রাহিম জাদ্রানকে। ১৩ তম ওভারে পেসার সাকিব সিদ্দিকুল্লাহ অটলের উইকেট নেন। ৬ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ কিছুটা ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রহমত শাহ প্রতিরোধ করে বাংলাদেশ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নেয়। দুজনের কেউই ম্যাচ জিতিয়ে আসতে পারেননি তবে লক্ষ্য নাগালে রেখে এসেছিলেন। দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৫০ রান। এরপর আজমতউল্লাহর ৪০ ও হাসমতউল্লাহ শাহীদির ৩৩ রানে আফগানিস্তান জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অতি সহজেই। বোলিংয়ে তানজিম ৩১ রানে নেন ৩ উইকেট। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আজমতউল্লাহ হয়েছেন ম্যাচ সেরা। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামীকাল শনিবার একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। আফগানিস্তান আট ও বাংলাদেশ চার মাস পর ওয়ানডে ক্রিকেটে মাঠে নেমেছিল। জড়তা ছিল দুই দলেরই। কিন্তু আফগানিস্তান দেখিয়েছে পেশাদারিত্ব। জয়ী তীব্র চাওয়া ছিল তাদের। শেষমেষ হাসিটা তাদের মুখেই ফুটেছে।