জুনায়েদ-রিফাতের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের নাম-” ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ” সংক্ষেপে ‘আপ বাংলাদেশ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে একটি নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা। “ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ” বা সংক্ষেপে ‘আপ বাংলাদেশ’ নামে গঠিত হতে যাওয়া এই প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্বে রয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে জুনায়েদ জানান, “জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে” নতুন এই প্ল্যাটফর্ম গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে এর আত্মপ্রকাশ হবে বলে জানান তিনি।

‘আপ বাংলাদেশ’-এর প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পিলখানা, শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার মতো ঘটনাগুলোর বিচার নিশ্চিত করা। একইসঙ্গে জুলাইয়ের আন্দোলনে আহত যোদ্ধা ও শহিদ পরিবারগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে এই প্ল্যাটফর্ম।

আলী আহসান জুনায়েদের ভাষ্যমতে, “ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা হবে আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য।”

এই নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম শুধু তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক সংকটের প্রতিক্রিয়া নয়; বরং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাজ-রাজনৈতিক রূপান্তরের দাবি বহন করছে। ‘আপ বাংলাদেশ’-এর প্রস্তাবনায় সমাজের সর্বস্তরে যোগ্য, নৈতিক ও মূল্যবোধসম্পন্ন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে সামাজিক সুবিচার, মানবিক মর্যাদা, ধর্মীয় মূল্যবোধে শ্রদ্ধাশীল সমাজচুক্তি এবং একটি বৈষম্যহীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকার।

জুনায়েদ বলেন, “আমরা রাজনীতিতে পেশিশক্তির দাপট, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনৈতিক অর্থনীতির যে বৃত্ত—তা ভেঙে দিতে চাই। সমাজে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”

প্ল্যাটফর্মের ঘোষণায় চারটি বড় চ্যালেঞ্জ বা ‘রাহুগ্রাস’ চিহ্নিত করা হয়েছে— ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ ও দুর্নীতি। এগুলো থেকে দেশকে মুক্ত করার প্রত্যয়ই প্ল্যাটফর্মটির মৌলিক আদর্শ।

আলী আহসান জুনায়েদ ও রাফে সালমান রিফাত এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন। কিছুদিন আগেও তাদের ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’তে (এনসিপি) যুক্ত হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে তারা সে উদ্যোগ থেকে সরে দাঁড়িয়ে নতুন পথ খুঁজতে শুরু করেন, যার ফসল এই নতুন প্ল্যাটফর্ম।

আলী আহসান জুনায়েদ এই রাজনৈতিক উদ্যোগে দেশের সচেতন তরুণ সমাজ, ছাত্রজনতা এবং পরিবর্তনে আগ্রহী সকল নাগরিককে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনের সংগ্রামে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শামিল হওয়ার সময় এসেছে।”