কুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ, একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত,কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় যুবদল নেতা বহিষ্কার,
একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের সময় দেশীয় অস্ত্র হাতে নেওয়া মাহবুবুর রহমানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মাহবুবুর রহমান দৌলতপুর থানা যুবদলের সহসভাপতি ছিলেন।
আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নেবে না।’ এছাড়া, যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মঙ্গলবার কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাজনীতি বন্ধের দাবি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয় কিছু ব্যক্তিও ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষের সময় মাহবুবুর রহমানের অস্ত্র হাতে থাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন বহিরাগতকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সংঘর্ষের পর থেকে কুয়েট ক্যাম্পাস ও এর আশপাশের এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আজ বুধবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক ও চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে, উপাচার্য, উপউপাচার্য ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে ছাত্ররা। তারা হামলার ঘটনায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। আজ দুপুর ১টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে কুয়েটের সব ধরনের ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, কুয়েটে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণ অনুসন্ধান করতে আজ সরেজমিন পর্যবেক্ষণে যাচ্ছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের একটি প্রতিনিধি দল। এরপর দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন বলে ожиনা করা হচ্ছে।
কুয়েট ক্যাম্পাসে চলমান উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তরফ থেকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ ও পরিস্থিতি শান্ত করতে আরও কার্যকর উদ্যোগের প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।