জানা নিউজ

ইরানের নতুন সামরিক নেতৃত্বে কারা? কী তাদের ভূমিকা?

ইসরায়েলের বিমান হামলায় শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডাররা নিহত হওয়ার পর দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নতুন কমান্ডারদের নিয়োগ দিয়েছেন। নিহত কমান্ডারদের মধ্যে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-এর কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আম্বিয়া ঘাঁটির প্রধান গোলামালি রশিদ এবং এরোস্পেস ফোর্সের কমান্ডার আমির আলী হাজিজাদেহ। হামলার পরপরই খামেনি নতুন কমান্ডারদের ঘোষণা করেন, যারা ইরানের সামরিক কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

ইরানের নতুন সামরিক নেতৃত্ব

১. আবদুর রহিম মুসাভি: সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান
মেজর জেনারেল সাইয়্যেদ আবদুর রহিম মুসাভি ইরানের সেনাবাহিনীর একজন প্রবীণ অফিসার। ১৯৫৯ সালে কোমে জন্মগ্রহণকারী মুসাভি ইরান-ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং আর্টিলারি ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রথম সেনা অফিসার যিনি সরাসরি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেলেন, যা ইরানের সামরিক কাঠামোয় একটি বড় পরিবর্তন। এর আগে এই পদে আইআরজিসি কমান্ডাররাই নিয়োগ পেতেন।

২. মোহাম্মদ পাকপুর: আইআরজিসির কমান্ডার-ইন-চিফ
মেজর জেনারেল মোহাম্মদ পাকপুর ১৬ বছর ধরে আইআরজিসির স্থল বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬১ সালে আরাকে জন্মগ্রহণকারী পাকপুর ইরান-ইরাক যুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং পরবর্তীতে সাবেরিন নামের বিশেষ বাহিনী গঠন করেন। তিনি ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সীমান্ত রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

৩. আলী শাদমানি: খাতাম আল-আম্বিয়া ঘাঁটির প্রধান
মেজর জেনারেল আলী শাদমানি ইরানের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি খাতাম আল-আম্বিয়ার নতুন কমান্ডার। তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধে আনসার আল-হুসেন ডিভিশনের কমান্ডার ছিলেন এবং পরবর্তীতে সিরিয়ায় নিহত কমান্ডার হোসেইন হামেদানির সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন।

৪. আমির হাতামি: ইসলামিক প্রজাতন্ত্র সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
আমির হাতামি ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তিনি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রোগ্রামের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন এবং কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার নিষেধাজ্ঞার মুখেও পড়েছেন।

৫. মাজিদ মুসাভি: আইআরজিসি এরোস্পেস ফোর্সের কমান্ডার
হোসেইন (মাজিদ) মুসাভি ইফতেখারি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি এরোস্পেস ফোর্সের ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর এখন প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসির শীর্ষ কমান্ডাররা নিহত হওয়ায় ইরানকে দ্রুত নতুন নেতৃত্ব গঠন করতে হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন ইরানের সামরিক কৌশলে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।